রূপগঞ্জের গাউছিয়া মার্কেট নারী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের।


খাজনা দিতে হয় না, চোর পকেটমার নেই
রূপগঞ্জের ভুলতা গাউছিয়া পাইকারী কাপড়ের মার্কেট নারী ক্ষুদে ব্যবসায়ীদের পদচারণায় এখন মুখোরিত। দেশের বিভিন্ন জেলার ৩০ হাজার মহিলা ক্ষুদে কাপড় ব্যবসায়ী এই মার্কেট থেকে পাইকারী দরে শাড়ি কাপড়, ওড়না, লুঙ্গি, গামছা, বোরকা, চাঁদর ও গজ কাপড় কিনে নিজ নিজ এলাকায় ফেরি করে বিক্রি করেন। এ ব্যবসা চালিয়ে তাদের অনেকে এখন স্বাবলম্বী। সে কারণে ভুলতা গাউছিয়া কাপড়ের মার্কেটে রমজান মাসের আগের সপ্তাহ থেকেই কেনাবেচা জমে ওঠে। 

এছাড়া দেশী-বিদেশী চলতি ফ্যাশনের শাড়ি, থ্রি-পিস, টু-পিস, লেহেঙ্গা, টি-শার্ট, ফুল শার্ট, জিন্স প্যান্ট, দেবদাস, ফতুয়া, বেনারশি, কাতান, মিরপুরি কাতান, দেশী জামদানি, লেদার আইটেম, বিভিন্ন ডিজাইনের পাঞ্জাবি ও বাচ্চাদের কাপড় মূলত রমজান মাসের শেষে দুই সপ্তাহ কেনাকাটা হয়। তবে মার্জাককলি, আনার কলি, সানিয়া মির্জা, অক্টোপাস, সাকিরা জামার চাহিদা এবার বেশি।

পুতুল ফ্যাশনের মালিক শাহজাহান ভুঁইয়া বলেন, শিশু-কিশোরদের হৈচৈ-এ মার্কেট উৎসবে মেতে উঠেছে। বিশ্বকাপ উচ্ছ্বাসের ছোঁয়া এখনো মন জুড়ে আছে। তারই অংশ হিসাবে বিশ্বকাপের সঙ্গীত তারকা সাকিরা জুনিয়রের নামে ফ্রক আকর্ষণ করছে ক্রেতাদের। গত বছরের তুলনায় এবার শিশু-কিশোরদের পোশাক বিক্রি হচ্ছে দ্বিগুণ। মা ফ্যাশনের মালিক জাকির হোসেন বলেন, এখানে পোশাকের দাম কম। ডিজাইনেও রয়েছে নতুনত্ব। কালেকশন ভাল। বৈচিত্র্যময় এ সকল পোশাকের দাম নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের নাগালের মধ্যে। তবে সুতি কাপড়ের চাহিদাও কম নয়। 

গাউছিয়া মার্কেটে পাইকারী ও খুচরা ক্রেতাদের কোন খাজনা দিতে হয় না। চোর-পকেটমারের উপদ্রব নেই। নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে শতাধিক প্রহরী ও কমিউনিটি পুলিশ। আছে ভুলতা ফাঁড়ি পুলিশ। থাকা-খাওয়া ও নামাজের স্থান সব মিলিয়ে সকল সুযোগ-সুবিধা থাকায় দিন দিন মার্কেটের ব্যবসায়ীদের প্রসার ঘটেছে। ক্ষুদে কাপড় ব্যবসায়ী মহিলারাও স্বাবলম্বী হচ্ছে।

মার্কেটের সাড়ে তিন হাজার স্থায়ী দোকানে কেনাবেচা চলছে। প্রতি মঙ্গলবার এখানে পাইকারী ক্রয়-বিক্রয় হয়। সোমবার দুপুর থেকেই ক্রেতা-বিক্রেতারা আসতে শুরু করেন। দেশের অধিকাংশ জেলার বড় ব্যবসায়ীরা এই মার্কেট থেকে পাইকারী দরে কাপড় ক্রয় করেন। ক্রেতাদের অধিকাংশই ক্ষুদে কাপড় ব্যবসায়ী।

ঢাকা থেকে ২৬ কিলোমিটার পূর্বে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের উত্তর পাশ ঘেঁষে ভুলতা গাউছিয়া পাইকারী কাপড়ের মার্কেট গড়ে ওঠেছে। পুরান ঢাকার ক্ষুদে কাপড় ব্যবসায়ী নীলা রানী সরকার জানান, সুদের সাড়ে তিন হাজার টাকা দিয়ে গাউছিয়া মার্কেট থেকে পাইকারী দরে কাপড় কিনে তিনি গত ৯ বছর আগে ব্যবসা শুরু করেন। এখন তার পুঁজি ৪৩ হাজার টাকা। তিনি পরিবার পরিজন নিয়ে এখন স্বাবলম্বী। নীলা তার ছেলে-মেয়েদের উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন দেখছেন